সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:১৭ অপরাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক: নরসিংদীর মনোহরদী বাসস্ট্যান্ড থেকে প্রকাশ্যে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে মিলন খান (৫০) নামের এক ব্যবসায়ীকে মাইক্রোবাসে তুলে নেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনায় পাঁচ আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গত রবিবার রাতে তাদেরকে নিজ নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
আটককৃতরা হলেন, মনোহরদী উপজেলার কোচেরচর গ্রামের জয়নুদ্দিনের ছেলে আলম শেখ, মনোহরদী পৌরসভা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. কফিল উদ্দিনের ছেলে আরিফ আল কফি, সল্লাবাইদ গ্রামের হারুন অর রশিদের ছেলে বাপ্পী, বিরিকের ছেলে টিপু, সুলতান উদ্দিনের ছেলে সাইফুল ইসলাম।
জানা যায়, মনোহরদী উপজেলার নামা গোতাশিয়া গ্রামের করম আলী খানের ছেলে মিলন খান গত এক বছর আগে মনোহরদী বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন সাড়ে সাত শতাংশ জমি দুই কোটি ২৫ লাখ টাকা দাম নির্ধারণ করে কাপাসিয়া উপজেলার দক্ষিণগাঁও গ্রামের আব্দুল খালেকের ছেলে আজম সরকারের কাছে বিক্রির জন্য মৌখিকভাবে চুক্তি করেন। তাৎক্ষণিক আজম সরকার মিলন খানকে ৫৭ লাখ টাকা নগদ দিয়ে বাকি টাকা সাত মাসে পরিশোধ করার পর জমি রেজিস্ট্রি করার সিদ্ধান্ত হয়।
কিন্তু আজম সরকার বায়নার টাকা দিয়েই উক্ত জমি দখলে নিয়ে বহুতল ভবন নির্মাণের কাজ শুরু করেন। বর্তমানে উক্ত ভবনের দ্বিতীয় তলার ছাদের কাজ শেষ করে তৃতীয় তলার কাজ চলমান। এরিই মধ্যে এক বছর অতিক্রম হলেও আজম সরকার বাকি টাকা পরিশোধ করেননি। জমির মালিক মিলন খান তার পাওনা টাকার জন্য বারবার তাগাদা দিলেও কর্ণপাত করেননি আজম সরকার। বরং স্থানীয় কয়েকজন সন্ত্রাসীদের সঙ্গে নিয়ে জোরপূর্বক ভবনের কাজ চালিয়ে যেতে থাকেন। তাছাড়া তিনি নিজেকে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সোহেল তাজের আত্মীয় বলে পরিচয় দিয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার করে যাচ্ছেন।
গত রবিবার সকালে জমির মালিক মিলন খানকে মোবাইল ফোনে আজম সরকার জানান, আজ জমির পাওনা টাকা পরিশোধ করে জমি রেজিস্ট্রি করা হবে। তাদের কথা অনুযায়ী মিলন খান সকাল নয়টায় মনোহরদী বাসস্ট্যান্ডে উপস্থিত হলে জমির ক্রেতা আজম সরকার, মনোহরদী পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি কফিল উদ্দিনের দুই ছেলে আরিফ আল কফি, আশিক আল কফি, ভাতিজা বাপ্পি, সল্লাবাইদ গ্রামের দুলাল মিয়ার ছেলে হিরণ, সুলতান মিয়ার ছেলে সাইফুল ইসলাম, বিরিক মিয়ার ছেলে টিপু, আবুল হাসিমের ছেলে জুয়েল, কোচের চর গ্রামের জয়নুদ্দিনের ছেলে আলম শেখ, রফি মিয়ার ছেলে আব্দুল কাদির, কাচের চর গ্রামের জয়নুদ্দিনের ছেলে আলম শেখসহ অজ্ঞাতনামা আরো কয়েকজন জোড়পূর্বক মিলন খানকে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে কাপাসিয়া উপজেলার দক্ষিণগাঁও গ্রামের মরিয়ম ট্রাস্ট ফাউন্ডেশন ভবনের একটি কক্ষে নিয়ে যায়। সেখানে ভয়ভীতি দেখিয়ে পাঁচটি খালি স্টাম্পে স্বাক্ষর নেয়। সংবাদ পেয়ে মিলন খানের ছোট বোন মনোহরদী থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করলে পুলিশ গিয়ে মিলনকে উদ্ধার করে থানায় এনে পরিবারের কাছে তুলে দেয়।
মনোহরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুজ্জামান জানান, ব্যবসায়ীকে অপহরণ করা ঘটনাটি জানতে পেয়ে পুলিশ পাঠিয়ে কাপাসিয়া উপজেলার আড়াল থেকে অপহৃত মিলন খানকে উদ্ধার করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছে। থানায় মামলা দায়েরের পর পাঁচ আসামিকে গ্রেপ্তার করে আজ সোমবার বিকেলে আদালতে পাঠানো হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশ অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে।